ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় | How To Get Bank Loan Easy Way

আমাদের জীবনে চলার পথে ব্যাংক লোন শব্দটির সাথে সবাই কম- বেশি পরিচত আছেন। আজকের আর্টিকেলে আছে, ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়, ব্যাংক লোন কত পকার, লোন পাওয়ার সর্ত, সুদের হার ইত্যাদি আরও অনেক কিছু আছে, ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সন্মন্ধে।

ব্যাংক লোন পাওয়ার সহজ উপায়:

আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোন বা ঋণ পেতে চান তাহলে আপনাকে আগে জানতে হবে ব্যাংক থেকে লোন বা ঋণ পাওয়ার উপায় কি? আপনি যদি ব্যাংকের শর্তগুলো পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনি সহজে লোন বা ঋণ নিতে পারবেন। এখন আপনার একটি মোটামুটি আর্থিক ব্যবস্থা থাকতে হবে, কারণ ভালো আর্থিক ব্যবস্থা না থাকলে ব্যাংক আপনাকে লোন দিবে না। তাই আপনার একটি ভালো আর্থিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। আপনার যদি ভালো আর্থিক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে আপনি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পর আপনি ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না, তাই আপনার একটি ভালো আর্থিক ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ব্যাংক লোনের ধরণ ও প্রকারভেদ:

বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের লোন প্রদান করে থাকে। ব্যাংক লোন অনেক ধরনের হয়। যা আপনি ব্যাংক লোন কোন উদ্দেশ্যের জন্য নিচ্ছেন সেটার উপর নির্ভর করে। আপনি ব্যাংক লোন নেওয়ার আগে আপনি কোন কাজের জন্য নিচ্ছেন কোন ধরনের উদ্দেশ্যের জন্য নিচ্ছেন সেটা আপনাকে প্রথমে সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে।

ব্যাংক লোন কত প্রকার ও কি কি?

ব্যাংক লোন অনেক ধরনের হতে পারে তার মধ্যে কয়েকটি নিম্নে দেওয়া হলো-

  • হোম লোন: আপনি বাড়ি বিক্রি বা বাড়ি তৈরি করার জন্য যে লোন নিবেন সেটাকে হোম লোন বলা হয়।
  • পার্সোনাল লোন: আপনি আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যে লোন নিবেন সেটাকে পার্সোনাল লোন বা ব্যক্তিগত লোন বলা হয়। এটিকে অনেক সময় স্যালারি লোন বলা হয়।
  • অটো লোন: গাড়ি কেনার জন্য যে লোনটি আপনি নিবেন তাকে অটো লোন বা কার লোন বলা হয়।
  • বিজনেস বা ব্যবসায়িক লোন: ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে আপনি যে লোনটি নিবেন সেটিকে ব্যবসায়িক লোন বা বিজনেস লোন বলা হয়।
  • প্রবাসী লোন: ধরুন আপনি দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য লোন নিতে চাচ্ছেন সে লোনকে প্রবাসী লোন বলে।
  • স্টুডেন্ট লোন বা এডুকেশন লোন: পড়াশোনার খরচের জন্য আপনি যে লোন নিবেন সে লোনকে স্টুডেন্ট বা এডুকেশন লোন বলা হয়।
  • কৃষি লোন: আপনি কৃষি কাজের জন্য বা কৃষিকাজে উৎপাদনের জিনিস ক্রয় করার জন্য জে লোন আপনি নিবেন সে লোনকে কৃষি লোন বলা হয়।

More Loan : CLICK HERE

ব্যাংক লোনের প্রকারভেদ:

গ্রাহকদের জন্য ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ঋণ কার্যক্রম করেছে।ব্যাংক লোন সাধারণত তিন প্রকার। যথা:

১- দীর্ঘ মেয়াদি লোন।
২- মধ্য মেয়াদি লোন।
৩- স্বল্প মেয়াদি লোন।

দীর্ঘ মেয়াদি লোন:
যে সকল ব্যাংক লোনের মেয়াদকাল ৫ বছরের বেশি সেগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী লোন বলা হয় দীর্ঘমেয়াদি লোনের সুদের হার তুলনামূলক বেশি হয়।

মধ্য মেয়াদি লোন: মধ্যমেয়াদি লোন বলা হয়- যে লোনের মেয়াদকাল ২-৫ বছর হয়ে থাকে। সেগুলোকে মধ্য মেয়াদি লোন বলা হয়।

স্বল্প মেয়াদি লোন: ব্যাংকের যে সকল লোন এর মেয়াদকাল এক বছর বা দুই বছরের কম হয়ে থাকে সেগুলোকে স্বল্প মেয়াদি লোন বলা হয়।

ব্যাংক লোন পাওয়ার সর্ত:


১- নিজের চরিত্র।
২- নিজের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি।
৩- নিজের জামানত।
৪- ব্যবসায়িক পরিস্থিতি।
৫- ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা।
৬- ব্যবসায়িক কার্যক্ষমতা।
৭- নিজের ক্রেডিট ইতিহাস।
৮- নিজের ক্রেডিট স্কোর।
৯- সরকারী লোন গ্যারান্টি।

এছাড়াও যে সকল বিষয় বিবেচনা করে ব্যাংক লোন প্রদানের ক্ষেত্রে:
১- লোন।
২- কোম্পানির মান।
৩- স্টার্টআপ খরচ।
৪- ইক্যুইটি রিটার্ন।
৫- অপারেটিং খরচ।
৬- রাজস্ব অনুমান। মানে (আয়)

আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস কাগজপত্র আগে থেকে সংগ্রহ করতে হবে ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য।ব্যাংক লোনের জন্য আবেদন করার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন তা নিম্নে দেওয়া হলো:

  • আপনার ট্রেড লাইসেন্সের নবায়নকৃত ফটোকপি।
  • আপনার লোন গ্রহীতা এবং নমিনের পাসপোর্ট সাইজের ছবি লগবে।
  • যদি আপনি ব্যবসায়ের জন্য লোন নিতে চান, তাহলে প্রতিষ্ঠানের চলতি হিসাব লাগবে।
  • ঔষধ ব্যবসার জন্য লোন নিলে ড্রাগ লাইসেন্স দিতে হবে।
  • খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য লোন নিলে বিএসটিআই সার্টিফিকেট লাগবে।
  • ডিজেল ও এসিড ব্যবসার জন্য ব্যাংক লোন নিলে ডিসির অনুমোদনপত্র লাগবে।
  • বিগত এক থেকে তিন বছরের ব্যাংক প্রতিবেদন লাগবে। যদি দোকান ও ঘর চুক্তি থাকে তবে চুক্তিনামা পত্র লাগবে।
  • পজিশনের কাগজপত্র লাগবে।
  • আবেদন প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টিআইএন সার্টিফিকেট লাগবে।
  • আবেদন প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্যাট সার্টিফিকেট লাগবে।
  • গ্যাস বিল- বিদ্যুৎ বিল- টেলিফোন বিল ইত্যাদি লাগবে।
  • আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র লাগবে।
  • আপনার কর্মচারীদের নাম, পদবী এবং মাসিক বেতনের তালিকা লিস্ট লাগবে।
  • রপ্তানি ও আমদানি ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে।
  • আপনার নিজস্ব দোকান থাকলে মজুদ মাল ও তার বর্তমান মূল্যের তালিকা লাগবে।
  • আপনি যদি বর্তমানে অন্য কোথাও ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে তার বিবরণী লাগবে।
  • আপনার ব্যবসার বিগত এক বছরের বিক্রয় ও আর্থিক বিবরণী লাগবে

উপরে লিখিত কাগজপত্রগুলো সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। আপনার আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসা আছে তাহলে আপনি ব্যাংক লোন নিতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনার আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো লাগবে। এভাবে যার যে ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান আছে তার ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র দিয়ে ব্যাংক লোন নিতে পারবেন সহজে।

More Loan : CLICK HERE

সুদের হার:

বাংলাদেশের কোম্পানি আইন অনুযায়ী ১৯৯১ এর ৪৫ তম ধারা অনুযায়ী সব ধরনের বিনিয়োগ লোনে সুদের হার করা হয় সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। তবে এটা ক্রেডিট কার্ডের আওতাভুক্ত নয়। আলাদা সুদের হার প্রযোজ্য হবে সকল ডিজিটাল কার্ডের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কোম্পানি আইন কে লঙ্ঘন করতে পারবে না। বাংলাদেশের প্রতিটি ব্যাংক যেকোনো প্রতিযোগিতায় সুদের পরিমাণ ৯ শতাংশ এর বেশি কোনভাবেই করতে পারবে না।যদি আপনি ব্যাংক লোন নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারেন। তাহলে সে ঋণকে খেলাফি ঋণ বলা হয়। আপনি যদি কেলাফি ঋণ করে থাকেন। তাহলে সুদের হার অতিরিক্ত দুই শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হবে মানে ৯ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ যোগ করে ১১ শতাংশ করা হবে।

বাংলাদেশের সমস্ত ব্যাংক সুদের হার বাংলাদেশ ব্যাংক তথা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা নির্ধারণ করা হয়। কোন কারণে বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক রেট থেকে বেশি রেট নিতে পারবে না। তাই ব্যাংক লোন নেওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে সব কিছু দেখে চেক করে নিবেন।

জামানত হিসেবে কী রাখা হয়?

কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক আপনাকে জামানত ছাড়া কোন লোন প্রদান করবে না। কেননা ব্যাংক আপনাকে লোন দিলে সে লোনের ঋণের টাকা উঠানো ব্যাংকের অনেক ঝামেলা হয়। তাই ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণ দেওয়ার বিপরীতে ঋণগ্রহীদের থেকে বিক্রয় যোগ্য, নগদায়নযোগ্য, অথবা বৈধ জামানত গ্রহণ করে থাকে।মূলত নিজের টাকার সিকিউরিটির জন্য জামানত নিয়ে থাকে।আপনি কাউকে দার দিলে সে টাকা উঠাতে যেমন কষ্ট হয় তেমনি ব্যাংকেও কষ্ট হয় দিনের টাকা উঠাতে।

যদি কোনো গ্রাহক লোন নেওয়ার পর ঋণ পরিশোধ করতে না পারে। তাহলে উক্ত জামানত নিলামে তুলে বিক্রির মাধ্যমে ব্যাংক তার চাহিদা পূরণ করে থাকে।ব্যাংক লোনের বিপরীতে জামানত হিসেবে ব্যাংক জমি, জামা, ফ্ল্যাট, দালানকোটার কাগজপত্র গ্রহণ করে থাকে।

ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পর ঋণ খেলাপির কারণে অনেক মানুষ নিজের সবকিছু হারিয়েছে। তবে এখন ব্যাংক অনেক সহজ শর্তে লোন দিয়ে থাকেন। ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য সহজ শর্তে কোন জামানতের প্রয়োজন পড়ে না। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে ব্যাংক ফিক্সড ডিপোজিড ডকুমেন্টস এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংক লোন আবেদন করার সময় নিয়ে থাকেন।

ব্যাংক লোনের অসুবিধা:

প্রতিটা জিনিসের সুবিধা অসুবিধা রয়েছে তেমনি বাংলাদেশের সমস্ত ব্যাংকেও লোনের কিছু সুবিধা অসুবিধা থাকাটাই স্বাভাবিক। আপনি ব্যাংক থেকে যখন লোন নিবেন তারপর ঋণ পরিশোধ করার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট একটি সময় দেওয়া হবে। আপনি যদি সে সময়ের মধ্যে ঋণ দিতে না পারেন তাহলে ব্যাংক আপনার অনেক বিরুপ ঘটনা ঘটাতে পারে।

লোন নেওয়ার পর আপনার কখনো কখনো মনে হবে যে এই সুদের হার অনেক ভারি। কেননা আপনি যেমনটা মনে করেছিলেন তেমন হবে না। তাই ব্যাংক লোন নেওয়ার পর এই ঋণ দেওয়াটা আপনার বিষের মতো মনে হবে।

ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য কিছু টিপস:

  • আপনি কাজ করে যে আয় পান সে আয়ের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে।
  • আপনি আপনার ক্রেডিট রেকর্ড আরো উন্নত করুন।
  • আপনি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পর সে ঋণ আপনি পরিশোধ করতে পারবেন, এমন পরিষোধের ক্ষমতা আপনি প্রমাণ করুন।
  • আপনি ব্যাংক লোনের আবেদনপত্রে যা যা লিখলেন সেগুলো যথাযথভাবে পূরণ করুন।

আপনি যদি ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য আগ্রহী হন- তাহলে একজন আর্থিক উপদেষ্টার সাথে ভালোমতো পরামর্শ করে গুরুত্বপূর্ণ সবকিছু জেনে নিন। তারা আপনাকে আপনার ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন যে যা যা কাগজপত্র গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র গুলো প্রয়োজন সেগুলো উপস্থাপন করার জন্য সাহায্য করবে।

More Loan : CLICK HERE

Advertisement
Advertisement

Leave a Comment